বর্তমান যুগকে তথ্য ও প্রযুক্তির যুগ বলা হয়। আমরা আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তির অনেক কিছু ব্যবহার করি। টেলিফোন ও মােবাইলের মাধ্যমে হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজনের সাথে প্রতিনিয়ত কথা বলি। কম্পিউটারে হাজারাে তথ্য সংরক্ষণ করি এবং ই-মেইল-ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত মানুষের সাথে মুহূর্তের মধ্যে যােগাযােগ করি। উড়ােজাহাজের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে যাই। টেলিভিশনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের নানা ঘটনাপ্রবাহের সচিত্র প্রতিবেদন প্রত্যক্ষ করি। এভাবে বিজ্ঞানের অনেক আবিষ্কার বর্তমান যুগের মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ ও গতিশীল করে দিয়েছে। আবার পারমাণবিক বােমাসহ বিজ্ঞানের অনেক আবিষ্কার অপপ্রয়ােগের ফলে বিশ্বে অশান্তি ও অস্থিরতা বিরাজ। করছে। এজন্য প্রযুক্তি দায়ী নয়, দায়ী হচ্ছে প্রযুক্তির অপপ্রয়ােগকারীরা। সচেতন ও সত্যপিয়াসী ব্যক্তিমাত্রই জানে যে, ইসলাম ও বিজ্ঞান অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আল কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে বৈজ্ঞানিক নিদর্শন, সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণা এবং ব্যক্তি ও সমাজ গঠনে আল্লাহর সৃষ্টিনিদর্শন সম্পর্কে আলােচনায় সমৃদ্ধ। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আবিষ্কার ও উন্নয়নের সূচনা করেছে মূলত মুসলমানরা। শত শত বছর ধরে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দর্শনে মুসলমানরাই শ্রেষ্ঠ ছিল। আজকের অক্সফোর্ড ও ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতাে কর্ডোভা, দামেস্ক ও বাগদাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খ্যাতি বিশ্বব্যাপী ছিল। জ্ঞান আহরণের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জ্ঞানপিপাসু মানুষেরা দলে দলে মুসলিম দেশগুলােতে ভিড় জমাতাে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে শ্রেষ্ঠ থাকার কারণে রাজনীতি ও অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণও সে সময় মুসলমানদের হাতে ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে মুসলমানদের ভূমিকা নিছক অপ্রতুলই নয়; বরং এককালে জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রসারে মুসলমানদের যে একক অবদান ছিল, তা বােঝাই বর্তমান প্রজন্মের লােকদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানরা পিছিয়ে পড়ার ফলে বর্তমানে পাশ্চাত্য বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে, অমুসলিমরাই বিশ্বে কর্তৃত্ব করছে। অথচ মুসলমানরাই ‘খায়রু উম্মাহ’ তথা শ্রেষ্ঠ জাতি। মুসলমানদের চিন্তা, বিশ্বাস, তাহযীব ও তমুদুন অন্যান্য জীবনদর্শনে বিশ্বাসীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। পরােপকার ও মানবতার কল্যাণে মুসলমানদেরই অন্যদের চেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার কথা ছিল। ইসলামের শিক্ষানুসারে মুসলমানদের স্বভাব, চরিত্র ও ব্যবহার সবচেয়ে উত্তম এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্বে সর্বাপেক্ষা অগ্রসর হলে মুসলমানরা বিশ্বে কর্তৃত্বের আসনে আসীন থাকতাে। বাস্তবতা হচ্ছে, মুসলমানরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতিত ও নিপীড়িত।
Tk.
480
336
Tk.
350
263
Tk.
490
265
Tk.
100
74
Tk.
160
99
Tk.
350
294
Tk.
120
116