+880 1521-203767
(Whatsapp,
Imo,
Viber)
সমীক্ষার লেখকদ্বয় এক ওলন্দাজ দম্পতি। তারা কয়েক বছর বাংলাদেশে ছিলেন। বাংলা শেখার পর ঝগড়াপুর গ্রামে তারা এক বছর কাটিয়েছেন। সেখানকার নারীসমাজ ও দরিদ্র গৃহস্থ শ্রেণির জীবন সম্পর্কে তারা যে সমীক্ষা চালান তারই ফলশ্রতিতে রচিত বর্তমানের এই প্রতিবেদন। ঝগড়াপুরে লেখকদের এই অভিজ্ঞতার ফসল নিবেদিত হয়েছে বাংলাদেশের বামপন্থি ও তৃতীয় বিশ্বের সমস্যাবলি সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি লাভে ইচ্ছুক পাশ্চাত্যের অধিবাসীদের উদ্দেশে। বৈদেশিক সাহায্যের সমস্যাবলি নিয়ে এতে বিশেষ কোনো আলোচনা না থাকলেও একথা স্পষ্ট যে বাংলাদেশ বা সমপর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোবিশিষ্ট কোনো দেশে এই বৈদেশিক সাহায্য যে গ্রামীণ দরিদ্র শ্রেণির কোনো হিতার্থে আসবে তা আশা করার কোনো কারণ নেই। সমীক্ষাটি চার খণ্ডে রচিত। প্রথম খণ্ডে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের সাধারণ এক গ্রামের ভ‚মিকাসহ লেখকদের গ্রামের জীবনযাত্রা ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে। কাঠামোগত সাক্ষাৎকারের বদলে গ্রামীণ জীবনযাত্রায় প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ও পর্যবেক্ষণের পদ্ধতিকেই তারা এই সমীক্ষায় প্রাধান্য দেন। দ্বিতীয় খণ্ডে বলা হয়েছে মেয়েদের কথা তাদের অর্থনৈতিক শোষণ, যৌনজীবনে অপব্যবহার ও সামাজিক নির্যাতনের ইতিবৃত্ত। সামগ্রিক উৎপাদন প্রক্রিয়ায় মেয়েদের ভ‚মিকা অপরিহার্য হলেও এ ভ‚মিকা অস্বীকৃত। উৎপাদন উপকরণের মালিকানা পুরুষের হাতে। মেয়েদের কাজের চরিত্রটি পুরুষের কাজের পরিপূরক ও কার্যত গৌণ। মেয়েরা খাদ্যসামগ্রী প্রক্রিয়াজাত করে যে কাজের আদিতে অর্থাৎ ফসল ফলানোর কাজে ছিল পুরুষের হাত। সাধারণত স্বামী বা স্ত্রী কেউই পারস্পরিক যৌনজীবন থেকে পূর্ণ তৃপ্তি পায় না। ফলে উভয়ই অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত। এক্ষেত্রে মেয়েদের অবস্থা পুরুষদের চেয়ে শোচনীয়। কারণ তাদের যৌন প্রয়োজনের কোনো মূল্যই দেওয়া হয় না এবং তাদেরকে শুধু পুরুষের ভোগের সামগ্রী হিসেবেই দেখা হয়। সমাজে প্রচলিত পর্দাপ্রথাও মেয়েদের শোষণের অন্যতম একটি হাতিয়ার। এই খণ্ডের অধ্যায়গুলোতে শ্রেণিসংগ্রামের সঙ্গে মেয়েদের মুক্তিসংগ্রামের সম্পর্কটি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে শোষণ ও নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়েদের প্রতিক্রিয়া ও সবশেষে এই অবস্থার পরিবর্তন সূচনাকারী একটি সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসেবে জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে কিছু বলা হয়েছে। তৃতীয় খণ্ডের বিষয়বস্তু হচ্ছে গৃহস্থসমাজ ও তার শ্রেণিবিন্যাস। এই শ্রেণিবিন্যাসের গুরুত্ব ও জটিলতার বিস্তারিত আলোচনা করে যুক্তি দেখানো হয়েছে যে, কোনো পরিবারের শ্রেণি অবস্থান নির্ধারণে ভ‚সম্পত্তির সঙ্গে উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণের মালিকানা (যেমন: লাঙল, বলদ ইত্যাদি) ও ঐ পরিবারে অতীত ইতিহাসের পর্যালোচনাও প্রয়োজন। এসব তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গেছে, ঝগড়াপুরের ১৭৩টি পরিবারের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি দরিদ্র, এক-চতুর্থাংশ মধ্যবিত্ত ও এক-পঞ্চমাংশ ধনিকশ্রেণিভুক্ত। ঐ গ্রামে ভ‚স্বামী একজন। সনাতন বংশধারার আর্থসামাজিক দিকটিও আলোচনায় তুলে ধরা হয়েছে। ন্যূনতম মজুরিতে খেতমজুরদের বেঁচে থাকার সমস্যা, বর্গাচাষিদের জমি থেকে উচ্ছেদের আশঙ্কা ও ঋণে জর্জরিত পরিবারগুলোর ভয় ও দুঃখকষ্টের কথাও এখানে বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে। এ খণ্ডে সবশেষে বিশ্লেষণ করা হয়েছে বাংলাদেশের কৃষির উৎপাদন প্রক্রিয়া ও তার বৈশিষ্ট্যগুলো। চতুর্থ খণ্ডে আলোচিত হয়েছে গ্রামীণ রাজনীতির কথা। লেখকদের গ্রামে থাকাকালীন সময়ে সংঘটিত এক ধনী গৃহস্থের খুন হওয়ার ঘটনা, তার কারণ ও প্রতিক্রিয়া এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রামের প্রধান কলহ-বিবাদের মূল হচ্ছে জমিসংক্রান্ত বিরোধ। এ ধরনের বিরোধ প্রায়ই ঘটতে দেখা যায়। জোতদার প্রভাবিত গ্রাম সরকারের কার্যাবলি এবং দরিদ্র গৃহস্থ শ্রেণির শত্র ও মিত্রদের কথাও এখানে আলোচনা করা হয়েছে। সবশেষের অধ্যায়টি নিবেদিত হয়েছে বিপ্লবী আন্দোলনের সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ পর্যালোচনায়।
Tk.
600
510
Tk.
500
250
Tk.
600
450
Tk.
200
150
Tk.
600
450
Tk.
1500
1230
Tk.
400
280
Tk.
130
98
Tk.
240
158
Tk. 160
Tk.
40
24