+880 1521-203767
(Whatsapp,
Imo,
Viber)
“দেশের কথা” বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ দীর্ঘ বিরতির পর কলকাতা থেকে দেশের কথা গ্রন্থটি প্রকাশিত হবার পর এই গ্রন্থ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সমালােচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে যে কথা বলেছিলেন, বারিদবরণ ঘােষ তা সংগ্রহ করে মূল গ্রন্থের সঙ্গে গ্রন্থিত করার মধ্য দিয়ে যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন তা উল্লেখ করা না হলে একটি বাস্তব সত্যের অপমৃত্যু ঘটবে। জনজীবনের ঘটনবলী সম্বল করে যখন লেখক কোনাে গ্রন্থ লেখেন তার ভেতরে থাকে সমকালীন সামাজিক সঙ্কটের একটা প্রতিচ্ছবি। যেসব ঘটনা সামাজিক ন্যায়বােধের পরিপন্থী, সেসব কথা গ্রন্থভুক্ত করার তাগিদ অনুভব করেন প্রকৃতপক্ষে ইতিহাসবিদ। সমাজবিদরাও সেক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকেন না। যে মুহূর্তে একটি গ্রন্থ প্রকাশ পায়, তার ভেতরে স্থান পাওয়া সব তথ্য শুধু সমকালীন যুগের ঐতিহাসিক বিবৃতি হিসেবেই বিবেচিত হয় না তখন, ভবিষ্যতের জন্য সেখানে দিগদর্শনের সন্ধান পাওয়া যায়। দেশের কথা গ্রন্থের পরতে পরতে রয়েছে রাশি রাশি তথ্যকণিকা। এসব তথ্য থেকে অনুভব করা যায় যে ব্রিটিশের শােষণ এবং শাসন ভারতকে কাঙাল করে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল। অখণ্ডতা প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন: ইংরাজের সঙ্গে আমাদের কতকগুলি মিল আছে। এতকাল সে আমাদের মধ্যে বাস করিতেছে, তবু সে বাসিন্দা হইল না, তবু সে সের্বদা উড়ু উড় করে। যেন কোনাে সুযােগে একটা ফলো পাইলেই। মহাসমুদ্রপারে তাহার জন্মভূমিতে পাড়ি দিতে পারিলেই বাঁচে। সব চেয়ে আশ্চর্য সাদৃশ্য এই যে, তুমি যতােই তাহার কাছে নরম হইবে, যতােই ‘জো হুজুর খােদাবন্দ’ বলিয়া হাত জোড় করিবে ততােই তাহার প্রতাপ বাড়িয়া উঠিবে; আর যদি তুমি ফস্ করিয়া হাতের আস্তিন গুটাইয়া ঘুষি উঁচাইতে পারাে; খ্রিস্টান শাস্ত্রের অনুশাসন অগ্রাহ্য করিয়া চড়টির পরিবর্তে চাপড়টি প্রয়ােগ করিতে পারাে, তবে সে জল হইয়া যাইবে। আবার অবস্থা ও ব্যবস্থা প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশের কথা গ্রন্থ সম্পর্কে আলােচনাকালে খুব সংক্ষেপে একটি তথ্য উল্লেখ করেছেন: ইংরেজ যে কেমন করিয়া এই জাহাজ-নির্মাণের বিদ্যা বিশেষ চেষ্টায় বাংলাদেশ হইতে বিলুপ্ত করিয়া দিয়াছে তাহা শ্রীযুক্ত সখারাম গণেশ দেউস্কর মহাশয়ের ‘দেশের কথা’ নামক বইখানি পড়িলে সকলে জানিতে পারিবেন।’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই অর্থপূর্ণ কথা থেকে বােঝা যায় ইংরেজরা কেবল ভারতের জাহাজ শিল্পকেই ধ্বংস করেনি, তারা এ দেশের তাঁত শিল্প, কারুশিল্পসহ মানব সম্পদের যাবতীয় ক্ষতিসাধন করতে বিন্দুমাত্র ত্রুটি করেনি। এই প্রসঙ্গে দেশের কথা গ্রন্থে সখারাম লিখেছেন: বৃটিশ শাসনে ভারতবর্ষের যে সকল অনিষ্ট সংসাধিত হইয়াছে, তন্মধ্যে ভারতবাসীর বহু গৌরবের শিল্প, জ্ঞান ও বীরভাবের ক্রমিক বিলােপ একটি উল্লেখের যােগ্য ঘটনা। ভারতের স্থাপত্য-বিদ্যা, হৰ্ম-বিজ্ঞান, সাহিত্য-রচনাকৌশল প্রভৃতি ক্রমেই বিলুপ্ত হইতেছে। এখন এরূপ অবস্থা ঘটিয়াছে যে, ভারতবাসীর যে এ সকল বিষয় আয়ত্ত করিবার শক্তি আছে, তাহা ভারতপ্রবাসী ইংরেজরাও সহজে বিশ্বাস করিতে চাহেন না। এইসব কথার গভীরে প্রবেশ করলে অনেক কথা ইতিহাসের বােধের স্তরে বারংবার ভেসে ওঠে। তিনি উল্লেখ করেছেন: ..ভারতে সাহস-ব্যবসায়ী ইংরাজের সংখ্যা যে পরিমাণে বাড়িতে লাগিল, ইংরাজের সুনাম সেই পরিমাণে বৃদ্ধি পাইল না। ইহাদিগের অনেকেই অসাধুতা ও অত্যাচারমূলক কার্য করিত। বাধা পাইবার ভয় না থাকিলে, কোম্পানির জাহাজের নায়কেরা পর্যন্ত জলে-স্থলে দস্যুতা করিতে ইতস্ততঃ করিতেন না। সুতরাং যে ভীষণ দৌরাত্ম ভারতীয় সমাজে ব্রিটিশরা কায়েম করে মানুষের ভেতরে ত্রাস সঞ্চার করেছিল, সেকথা যে অলীক নয়, তার একটি সংক্ষিপ্ত ভাষ্য সখারামের লেখায় পাওয়া গেল। ব্রিটিশ যুগপর্বের ইতিহাস যে কারণে আজো মানুষের ভেতরে আতঙ্কের সীমানাপ্রাচীর বলে প্রতিভাত হয়। অনেকটা কাঁটা তারের বেড়ার মতাে। ইংরেজরা সমগ্র ভারতকে একটা আতঙ্কের শহরে পরিণত করেছিল। শাসনব্যবস্থার ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিল সাম্প্রদায়িক চেতনার অগ্নিগােলক।
Tk.
350
263
Tk.
160
142
Tk.
240
192
Tk.
300
225
Tk.
220
165
Tk.
400
300
Tk.
172
127
Tk.
300
165
Tk. 110
Tk.
100
57
Tk.
150
120