অগ্নিগর্ভ মার্চ। ছাত্রজনতার আন্দোলনে উত্তাল ঢাকা শহর। সেই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক টগবগে তরুণও ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের অগ্নিঝরা ভাষণে তিনি উদ্দীপ্ত ও প্রাণিত। সংকল্প করলেন, দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য মাস্টারদা সূর্যসেনের মতো সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। ফিরে গেলেন ময়মনসিংহের পৈতৃক বাড়িতে। সংগঠিত করলেন সেখানকার বন্ধু ও তরুণ-যুবাদের। সাথে নিলেন ইপিআরের বাঙালি সদস্যদেরও। ২৬ মার্চ থেকে সদলবলে ঝাঁপিয়ে পড়লেন সম্মুখযুদ্ধে। ত্রাস সৃষ্টি হলো ওই অঞ্চলে আক্রমণে উদ্যত পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের মধ্যে। একদল তরুণ মুক্তিযোদ্ধার অসীম সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের অনন্য নজির স্থাপিত হলো। সে এক রোমাঞ্চকর বীরত্বগাথা। এই বীরত্বগাথাকে উপজীব্য করেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ম হামিদ রচনা করেছেন ফিরে দেখা একাত্তর বইটি। ২৬ মার্চ ময়মনসিংহের ইপিআর কার্যালয়ে ঢুকে সশস্ত্র পাকিস্তানি সৈন্যদের পাহারার মধ্যেই পাকিস্তানের পতাকা নামানো; ২৮ মার্চ ইপিআর ক্যাম্প মুক্ত করে বাংলাদেশের হলুদ মানচিত্রখচিত লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানো; ৩ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনীর টাঙ্গাইল দখলের পর ৫ এপ্রিল মাত্র ৯ জন ছাত্রযুবাকে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার দল গঠন ও মধুপুরে প্রতিরোধ ক্যাম্প স্থাপন এবং স্বীয় নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত ও পরাস্তকরণের মতো ঐতিহাসিক বিষয়গুলো সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় ম হামিদ তুলে ধরেছেন এ বইতে। পরবর্তীতে সহযোদ্ধাদের নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ, বাঙালিদের শরণার্থী জীবনের দুঃখ-দুর্দশা প্রত্যক্ষকরণ এবং নতুন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ প্রস্তুতির বর্ণনার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন স্মৃতিচারণমূলক এ বইয়ের প্রথম খণ্ড। মন্ত্রমুগ্ধের মতো এ বইটি পড়তে পড়তে পাঠক ফিরে যাবেন মুক্তিযুদ্ধকালের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোতে। মর্মে মর্মে অনুভব করবেন সেই ভয়াল-নিষ্ঠুর ঘটনাপ্রবাহ, যা আমাদের জন্য ছিল একইসঙ্গে সীমাহীন ভয় ও যন্ত্রণার এবং মর্যাদা ও গৌরবের বিষয়। লেখকের প্রত্যক্ষ বর্ণনায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়তে গিয়ে পাঠক পাবেন বিন্দুতে সিন্ধুর দর্শন। লেখকের প্রখর স্মৃতিশক্তি ও নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বইটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক ইতিহাস রচনার প্রয়াস না হয়ে সমগ্রতা লাভ করেছে। এখানেই লেখক ম হামিদের মুনশিয়ানা। ফিরে দেখা একাত্তর বইটি নিঃসন্দেহে মুক্তিযুদ্ধ তথা বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে পরিগণিত হবে।
Tk.
1400
1050
Tk.
300
225
Tk.
550
413
Tk.
400
300
Tk.
200
172
Tk.
300
225
Tk.
80
48
Tk.
32
30
Tk.
1500
1125
Tk.
825
561
Tk.
251
188