১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। আনন্দের ঢল নেমেছে সারা বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকা পরিণত হয়েছে বিজয় মিছিলের নগরীতে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করেছে, বাংলার মাটিতে পরাজিত হয়েছে দখলদার পশুশক্তি। পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ বিজয় ছিনিয়ে এনেছে বাংলার মৃত্যুঞ্জয়ী তরুণেরা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হচ্ছে বাংলার আকাশ-বাতাস। দীর্ঘ নয় মাসের ভীত-সন্ত্রস্ত জনগণ ফেলছে পরম স্বস্তির নিঃশ্বাস। সমগ্র দেশবাসী যখন বিজয়ের আনন্দে বিভোর, ঠিক তখনই এলো সেই মর্মান্তিক খবর। ১৮ ডিসেম্বর সকাল। বিজয় দিবসের মাত্র দু’দিন পরে। রায়েরবাজারের কাঁটাসুরে ও মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আবিষ্কৃত হলো মানব ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস বধ্যভূমি। শতাব্দীর জঘন্যতম এই বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের খবরে বিজয়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যে সমস্ত ঢাকায় নেমে এলো বেদনার অতলান্ত ছায়া। স্বাধীনতার আনন্দকে গ্রাস করল কান্নার রোল। ঢাকা শহরের কয়েক শত বুদ্ধিজীবীকে ঘাতকেরা মুক্তির পূর্বক্ষণে ধরে নিয়ে যায়। পরাজিত হওয়ার আগে, আত্মসমর্পণের আগে, মেরুদণ্ডহীন কাপুরুষ এই নরপশুরা শেষ কামড় দিয়েছে বিষধর সরীসৃপের মতো। বাঙালি জাতির উত্থানে প্রতিহিংসা আর নির্মম আক্রোশের বশবর্তী হয়ে নরঘাতকেরা এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। রায়েরবাজার ও ধানমন্ডি এলাকার বিভিন্ন গর্ত থেকে অসংখ্য লাশ উদ্ধার করা হলো। অধ্যাপক, ডাক্তার, সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের লাশ। বেশিরভাগ লাশই বিকৃত-চেনার উপায় নেই। এক সপ্তাহ আগে থেকেই এঁদের অনেকেই নিখোঁজ ছিলেন, আল-বদর এঁদেরকে বাড়ি থেকে ধরে এনে বন্দি করে রেখেছিল। রায়েরবাজার ও মিরপুরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের বধ্যভূমি আবিষ্কৃত হওয়ার পরে বিশ্ববাসী এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দায় মুখর হয়ে ওঠে। জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে এই বইয়ে।
Tk.
130
71
Tk.
200
150
Tk.
650
488
Tk.
140
77
Tk.
180
168
Tk.
130
125